ক্যামেরায় অপটিক্যাল জুম এবং ডিজিটাল জুম কি? উভয়ের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে আলোচনা।



চিত্রঃ Optical VS Digital ZOOM

সবাই তো এখন স্মার্ট ফোনেই ফটোগ্রাফি করে থাকে। DSLR/SLR অনেকেই চলন্ত পথে নিয়ে যাওয়াটা পছন্দ করেন না। তাই অনেকের পছন্দ একটি ভালো মানের ক্যামেরা ফোন সাথে রাখার। আর সেই ফোনের সাথে অবশ্যই ভালো মানের ফিচারতো থাকতেই হবে।

আজকে বেশি কিছু না, বর্তমানে টেক মার্কেটে ক্যামেরার বিশেষ ২টি জুম টেক "অপটিক্যাল জুম" এবং "ডিজিটাল জুম" নিয়ে কথা বলবো। অনেকেই জানতে চেয়েছেন ক্যামেরার "অপটিক্যাল জুম" এবং "ডিজিটাল জুম" এর অর্থ এবং এর মধ্যেকার পার্থক্য।

তো সিনেমা দীর্ঘায়ু না করে চলুন টেলিফিল্ম শুরু করা যাক।

ডিজিটাল, নাকি অপটিক্যাল; ক্যামেরার ক্ষেত্রে জুম একটি বিশেষ বিষয়। এটি একটি সিস্টেম যেটা দুরের বস্তুকে কাছে এনে ছবি তুলতে পারে। একবার চিন্তা করেন তো আপনি এমন একটি ছবি তুলতে চাচ্ছেন যেখানে সাবজেক্ট আপনার থেকে অনেক দূরে এবং ওই জায়গায় যাওয়া সম্ভব না। ওই মুহূর্তে আপনার ভালো মানের নিকটবর্তী ছবি পেতে হলে অবশ্যই ক্যামেরার জুম অপশনটি কাজে লাগাতে হবে।


অপটিক্যাল জুম

চিত্রঃ Optical Zoom
"অপটিক্যাল জুম" হচ্ছে বর্তমান বাজারের সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন জুমিং টেকনোলোজি। "অপটিক্যাল জুম" করার ক্ষেত্রে ক্যামেরা তার লেন্স ব্যবহার করে। "অপটিক্যাল জুম" দিয়ে যখন কোনো বিষয়বস্তুকে "জুম ইন" করবেন তখন ক্যামেরা তার লেন্সের সাহায্যে বস্তুটিকে ছোট-বড় করবে। তারমানে হচ্ছে লেন্সের মধ্যে দিয়ে আলোর আকারে ছবি যখন ক্যামেরার মধ্যে আসে, তখন লেন্সের বিভিন্ন আতস কাঁচের সাহায্যে বস্তুকে বড় করে ছবি প্রদর্শন করে। যেখানে ছবির কোয়ালিটিতে কোনো প্রকার পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। এক কথায় ছবির কোয়ালিটি অক্ষুণ্ণ থাকে।
সুতরাং ছবির কোয়ালিটি ঠিক রেখে দূরের বিষয়কে জুম করে কাছে দেখানোকেই অপটিক্যাল জুম বলে।

ভালো মানের জুমিং ছবি (কোয়ালিটি অপরিবর্তিত থাকবে) পেতে চাইলে অবশ্যই অপটিক্যাল জুমিং সম্পন্ন ক্যামেরা ফোন অথবা ডিভাইস নিবেন। কমপক্ষে ৮ এক্স জুম আছে এমন ক্যামেরা কেনা ভালো।


ডিজিটাল জুম

চিত্রঃ Digital Zoom
"ডিজিটাল জুম" বলতে আসলেই ব্যাপারটা ডিজিটাল বুঝায় যেখানে ক্যামেরা ডিজিটালি কাজ করে। "ডিজিটাল জুম" করার ক্ষেত্রে ক্যামেরা কিন্তু তার ডিজিটাল ক্ষমতাকেই ব্যবহার করে।
অর্থাৎ এখানে লেন্সের মধ্যে কোনো প্রকারের ম্যাগ্নিফাই করা যায় না, স্বাভাবিকভাবেই ছবি ক্যামেরার ফোকাল প্লেনে আসবে, কিন্তু মেমোরী কার্ডে রেকর্ড করার আগেই সেই ছবিকে "ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে" ছবির একাংশকে ম্যাগ্নিফাই করে নিয়ে বাকিটুকু ক্রপ করে মুছে ফেলবে তার পরেই তা মেমোরী কার্ডে রেকর্ড হবে।

"ডিজিটাল জুম" যেটা করে তা হলো ছবিটার যে অংশটুকু চাওয়া হচ্ছে , তাই রেখে বাকি অংশগুলো কেটে বাদ দিয়ে দেয়। তারপর কাটা অংশটুকু আবার স্ট্যান্ডার্ড সাইজে আনা হয়। যার ফলে ছবির মান খারাপ হয়ে যায়। যত বেশি "ডিজিটাল জুম" করা হবে , ছবির মান তত বেশি খারাপ হতে থাকবে।

কিছু ক্যামেরায় "অপটিক্যাল ও ডিজিটাল জুম" একসঙ্গেই ব্যবহার হয়। সেক্ষেত্রে প্রথমে লেন্সের (অপটিক্যাল) কাজ চলবে, তারপরে ডিজিটাল ম্যাগ্নিফাই হবে। এইসব ক্যামেরায় লেখাই থাকবে যেমন 5x Optical / 3x Digital Zoom (বিভিন্ন ক্যামেরার ক্ষমতা অনুযায়ী এইটা লেখা থাকবে)

এখানে উল্লেখ্য বিষয় হচ্ছে যে "অপটিক্যাল জুম" করার ক্ষেত্রে ছবির কোয়ালিটি খুবই কম হ্রাস পায় যা সাধারনত ধরাই যায়না। কিন্তু ডিজিটাল জুমের বেলায় যতো বেশি জুম করতে থাকবেন ততো বেশি কোয়ালিটি হ্রাস পেতে থাকবে। আপনি দেখবেন আপনার কাঙ্খিত বস্তু কাছে এসে যাচ্ছে, কিন্তু কোয়ালিটি হ্রাস পাচ্ছে ততো বেশি করে।
চিত্রঃ ZOOM

জুম এর ব্যাপারে যা জানা দরকারঃ
~ ডিভাইস ক্রয় করার সময় দেখে নিবেন ক্যামেরা কোন জুম টেকনোলোজি ব্যবহার করেছে।
~ জুম ২ প্রকার, (১) অপটিক্যাল জুম (২) ডিজিটাল জুম
~ "অপটিক্যাল জুম" ছবির কোয়ালিটিতে কোনো পার্থক্য আনে না, তবে তা খালি চোখে দেখা যায় না।
~ "অপটিক্যাল জুম" ক্ষমতাকে অনেক সময় ফোকাল লেন্থ দিয়েও প্রকাশ করা হয়। যেমন: 5.8-17.4mm, 35-105mm ইত্যাদি।
~ "ডিজিটাল জুম" এর ফলে ছবি অনেকটাই তার প্রকৃত গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে।
~ ডিজিটাল জুম যতো বেশি করা হবে , ছবির মান তত বেশি খারাপ হতে থাকবে।


প্লিজ Subscribe YouTube Channel, টেকনিক্যাল ভিডিও দেখার জন্য। 

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form