UPDATE: এন্ড্রোয়েড এর ডিসপ্লে নিয়ে খুটিনাটি সবকিছু ( All About Android Display )

Powered BY Google 

আজ ডিসপ্লে নিয়ে খুঁটিনাটি সব আলোচনা করবো, ইতিহাসের LCD থেকে শুরু করে Super Amoled Plus পর্যন্ত ।


তো চলুন শুরু করা যাক ,


এন্ড্রোয়েড এর ডিসপ্লে কি?

মূলত একটি এন্ড্রোয়েড পর্দার উপরে আমরা যা যা দেখতে পারি তাই ডিসপ্লে। এর মাধ্যমে আমরা প্রয়োজনীয় সব তথ্যাদি ছবি আকারে চোখের সামনে দেখতে পারি। যা কিনা কোনো বিষয়বস্তু নির্ধারণ করতে সহায়তা করে।


ডিসপ্লে কতো প্রকার এবং কি কি?

বর্তমান বাজারে নানা ধরনের এন্ড্রোয়েড ডিসপ্লের প্রযুক্তি দেখতে পাই। এক এক প্রযুক্তির ডিসপ্লের ধরনও এক এক রকম হয়ে থাকে। পাশাপাশি তাদের দামেরও তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।
এই কারনে আজকে বিভিন্ন কোম্পানি কম দামে এন্ড্রোয়েড ডিভাইস বিক্রি করতে সক্ষম হচ্ছে, অপরদিকে উন্নতমানের এন্ড্রোয়েড ডিসপ্লের কারনে কিছু কিছু এন্ড্রোয়েড পন্যের দামও আকাশচুম্বী হচ্ছে (যেমনঃ স্যামসং এর সুপার এমোলেড)
  • IPS LCD ডিসপ্লে
  • Retina ডিসপ্লে
  • Amoled ডিসপ্লে

ডিসপ্লের প্রকারভেদ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা

তাহলে প্রথম থেকেই শুরু করা যাক। একটু সময় নিয়ে বিস্তারিত পড়ুন এবং পপকর্ন এর পেকেট শেষ করে ফেলুন। আশা করছি এর পর থেকে ডিসপ্লের ব্যাপারে কেউ আপনার সাথে তর্কে আসতে চাইবে না।


IPS-LCD ডিসপ্লের ইতিহাস


শুরুতেই IPS LCD ডিসপ্লের প্রযুক্তি সমূহ নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্রযুক্তিতে বিভিন্ন প্রকারের  ডিসপ্লে হয়ে থাকে এবং তাদের ব্যাপারে আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো।

TN vs IPS Display
১) TN LCD ডিসপ্লেঃ

TN এর পুর্নরুপ হলো Twisted Nematic Technology. আর LCD এর পুর্নরুপ হলো Liquid Crystal Display. সারা বিশ্বে সস্তা মোবাইলের একমাত্র ভরসার নাম TN Display

সুবিধাসমূহঃ
১। বিশ্ববাজারে সবচেয়ে সস্তা মোবাইলের ডিসপ্লে
২। নিম্ন মানের চাইনিজ ফোনগুলোতে এ ডিসপ্লে ব্যাবহার করা হয়।
৩। TN Display তৈরিতে সবচেয়ে খরচ কম এবং এটি পুনরায় ব্যাবহার যোগ্য।

অসুবিধাসমূহঃ
১। এই ডিসপ্লের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এর সবচেয়ে কম Viewing Angle.অর্থাৎ সোজা কথায় আপনি এই ডিসপ্লেতে ফ্রন্ট অথবা এক থেকে দুই সাইট বাদে বিভিন্ন সাইট থেকে তাকালে নেগেটিভ দেখতে পারবেন।
২। এছাড়া TN Display তে 24 bit sRGB color gamut এ কোন ডিসপ্লে দেখা যায় না।


২) TFT LCD ডিসপ্লেঃ

TFT এর পুর্নরুপ হলো Thin Film Transistor Technology. আর LCD এর পুর্নরুপ হলো Liquid Crystal Display. কম ও মাঝারী দামের সেটের এই ডিসপ্লে বেশি ব্যবহার করা হয়।

সুবিধাসমূহঃ
১। তৈরী করা যায় অনেক সস্তায়
২। কম বাজেটের স্মার্টফোনগুলোতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়
৩। সবচেয়ে বেশি প্রচলিত স্ক্রীন টাইপ
৪। ভাল কোয়ালিটির TFT LCD স্ক্রীন বেশি উজ্জ্বল হবে আর যেকোন দিক দিয়ে তাকালেই মোটামুটি পরিস্কার দেখা যাবে।
৫। TN display এর একটু উন্নত এডিশন হলো TFT display

অসুবিধাসমূহঃ
১। খারাপ কোয়ালিটির TFT LCD ডিসপ্লে যুক্ত মোবাইলে রঙ ফ্যাকাশে দেখাবে এবং স্ক্রীনের সাইড দিয়ে তাকালে অন্ধকার দেখা যাবে।
২। এ ধরনের ডিসপ্লেতে ব্যাটারীর খরচ বেশি হয়।
৩। সূর্যের আলোতে এই স্ক্রীনে পরিস্কার দেখতে অসুবিধা হয়।
৪। এই ডিসপ্লেতে ডিসপ্লের কালো অংশ তেমন গাঢ় বা ডিপ নয়।
এখন আমরা সাধারণত দেখে থাকি প্রায় অধিকাংশ লো বাজেট ও মাঝামাঝি বাজেটের মোবাইল গুলোতে এটা অহরহ ব্যবহার হচ্ছে। তবে ব্রান্ড ভেদে এর মান একটু কম বেশি হতে পারে।

৩) Super LCD (SLCD)ডিসপ্লেঃ

এটি LCD স্ক্রীনের আধুনিকতম সংস্করন। এই ডিসপ্লেতেও সূর্যের আলোতে সহজেই দেখা যায়। এছাড়াও AMOLED স্ক্রীন থেকে রঙ আরো ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে।

সুবিধাসমূহঃ
১। LCD স্ক্রীনের আধুনিকতম সংস্করন
২। LCD এর তুলনায় এই ডিসপ্লেতে সূর্যের আলোতে সহজেই দেখা যায়
৩। AMOLED স্ক্রীন থেকে রঙ আরো ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে
৪। সাধারন LCD ডিসপ্লে থেকে এ ধরনের ডিসপ্লেতে ব্যাটারীর খরচ কম করে।
৫। TN ও IPS ডিসপ্লের পরিবর্তিত রূপ হচ্ছে Super LCD display
৬। এর Wide Viewing Angle , Brightness, Contrasity TN, TFT ও IPS ডিসপ্লের চেয়ে বহুগুন বেশি।
৭। তাছাড়া ইমেজের কালো অংশের গাঢ়ত্ব অধিক হওয়ায় ছবি ও মুভি নিখুঁতভাবে দেখা যায়। Super LCD Display এর একটি উদাহরণ হচ্ছে Samsung Galaxy Note 10.1 (2014 Edition) এর ডিসপ্লে।

অসুবিধাসমূহঃ
১। কালার সাপোর্ট রেশিও কম Super Amoled থেকে।
২।  Super LCD কখনোই ট্রু ব্লাক অংশকে ফুটিয়ে তুলতে পারে না।
৩। Amoled থেকে Super LCD ডিসপ্লেতে ব্যাটারীর খরচ বেশি করে।


৪) IPS LCD ডিসপ্লেঃ

IPS এর পুর্নরুপ হলো In-Plane Switching. এটি TFT LCD Display থেকে উন্নত। এই স্ক্রীনের ডিসপ্লে কোয়ালিটি ভালো এবং ব্যাটারী কম খরচ হয়। এটি সাধারন LCD থেকে বেশী দামের বলে বেশী দামের স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়।

সুবিধাসমূহঃ
১। TN ও TFT ডিসপ্লের low viewing angle এর সমাধান দিতে ডিসপ্লের জগতে হাজির হয়েছে IPS Display।
২। প্রথমদিকে এর উৎপাদন খরচ বেশি হলেও আশার কথা এখন এর উৎপাদন খরচ অনেক কম।
৩। ডিসপ্লে এর দাম কম হওয়াতে এখন কম টাকায় IPS LCD মোবাইল বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।


অসুবিধাসমূহঃ
১। IPS Display এর একটা সমস্যা হল এর ব্রাইটনেস ও কন্ট্রাসিটি কিছটা কম।
২। সাধারন LCD থেকে এর দাম বেশি।


Retina ডিসপ্লের ইতিহাস


এখন আসা যাক Retina ডিসপ্লের ব্যাপারে। এই স্ক্রিনটি শুধুমাত্র আইফোনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর নাম রেটিনা ডিসপ্লে বলা হয় কেননা মানুষের সাধারন চোখ দিয়ে পিক্সেল গুলোকে আলাদা করা বোঝা সম্ভব নয়। এর ছবির কোয়ালিটি,শার্পনেস খুবই উন্নত মানের। LCD-IPS Display এর বেজড ভার্সন হল RETINA DisplayNOVA Display। এই উভয় ডিসপ্লেই LG ব্রান্ডের তৈরি।

Ratina Display
তবে একটা কথা আজ আপনাদের সরাসরি বলি, তবে আপনারা প্লিজ iPhone লাভার কারো সাথে শেয়ার করবেন না। আসলে Retina ডিসপ্লে বলতে একটা বড় ফাঁকিবাজ করেছে Apple কোম্পানি। Retina ডিসপ্লে সাধারনত IPS-LCD এর একটি উন্নত ভার্শন, যা কিনা ক্রেতাদের সাড়া পাওয়ার জন্য Retina নামে মার্কেটিং করেছে তারা। মানুষ বলাবলি করত যে অ্যাপেল নতুন এক ডিসপ্লে আবিষ্কার করেছে যার নাম রেটিনা ডিসপ্লে, এবং এটি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ডিসপ্লে। তবে এই ডিসপ্লের মান অন্যান্য IPS-LCD ডিসপ্লের এর তুলনায় অনেক বেশি উন্নত এবং দামি।
How Display PPI matters
এমনটা নয় যে শুধু রেটিনা ডিসপ্লে আইফোন বা অ্যাপেল এর প্রোডাক্ট এ থাকে। এটি শুধু মাত্র একটি অ্যাপেল এর মার্কেটিং ফন্দি ছাড়া আর কিছু নয়। যখন অ্যাপেল প্রথম রেটিনা ডিসপ্লে বাজারজাত করেছিলো তখনকার সময় এই ডিসপ্লের পিক্সেল ঘনত্ব সবচাইতে বেশি ছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে এই ডিসপ্লের তেমন কোনো প্রচারণা নাই।


OLED/Amoled/sAmoled ডিসপ্লের ইতিহাস


OLED/ Amoled/ sAmoled নিয়ে বলার অনেক কিছু থাকলেও বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত এবং উন্নত ডিসপ্লে হিসাবে এই প্রযুক্তি ১ম স্থান দখল করে আছে।

OLED এর পুর্নরুপ হলো Organic Light Emitting Diode. এটি LCD থেকে ভালো কোয়ালিটির মোবাইল স্ক্রীন। এই ডিসপ্লে অনেক উজ্জ্বল,কৌনিক দিক থেকে সহজেই দেখা যায় এবং বেশ হালকা। প্রায় সব নামিদামী বিগ বাজেটের মোবাইল গুলোতে LED display দেখা যায়। এর অসাধারণ সুন্দর viewing angleDeeper Black Display র জন্য এটি LCD display কে ছাড়িয়ে গেছে। এর রহস্যের মুল কারন এতে কোন Back light ব্যাবহার করা হয় না।এর অর্গানিক কম্পাউন্ড নিজেই ব্যাকলাইটের কাজ করে। ফলে ছবি ও মুভি হয় নিখুঁত ও অসাধারণ। ডিসপ্লের ব্রাইটনেস ও কনট্রাস্ট হয় অত্যন্ত চমৎকার।

sAmoled
১) AMOLED ডিসপ্লেঃ

AMOLED এর পুরোটি হলো Active Matrix Organic Light Emitting Diode.


সুবিধাসমূহঃ
১। এই ডিসপ্লের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো পিক্সেলগুলো নিজ থেকেই আলো তৈরী করতে পারে
২। এর excellent viewing angle, Most deeper black display, নিখুঁত ছবি একে অনন্য করেছে।
৩। OLED স্ক্রীনের মতই এর ডিসপ্লে অনেক উজ্জল,শার্প এবং হালকা।
৪। হাই কোয়ালিটির স্মার্টফোনগুলোতে এই স্ক্রীন এখন অনেক ব্যবহার করা হয়।

অসুবিধাসমূহঃ
১। এর একটা সমস্যা যে সূর্যের আলোয় এর ডিসপ্লের ভিজিবিলিটি কিছুটা কম।



sAmoled
২) Super AMOLED ডিসপ্লেঃ

Super Amoled Display এর কিছু সুবিধা তুলে ধরা হলো,

সুবিধাসমূহঃ
১। AMOLED এর সূর্যের আলোর কম ভিজিবিলিটির সমাধান দিতে Samsung নিয়ে এসেছে Super AMOLED
২। এটি AMOLED ডিসপ্লে এর আধুনিক ভার্সন।
৩। স্যামসং এর গ্যালাক্সী স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়।
৪। এই ডিসপ্লে সবচাইতে হালকা ডিসপ্লে।
৫। ব্যাটারীর খরচও আগের থেকে কম হয় প্রায় ৩০% চার্জ সেভ করে।
৬। এই ডিসপ্লেটি সূর্যের আলোয় নিখুঁত ভাবে দেখা যায়, তার মানে দিনের বেলায় ৮০% কম আলো এই সকল ডিসপ্লেতে প্রতিফলিত হয়।
৭। এতে পাবেন হাই কোয়ালিটির ছবি ও মুভি দেখার নিশ্চয়তা।
৮। ৪০% বেশি কালারফুল অন্যান্য ডিসপ্লের তুলনায়।

Super Amoled এর উন্নত সংষ্করণ হচ্ছে Super Amoled Plus


Touch Screen কতো প্রকার ও কি কি?


Touch Screen ২ই প্রকার, নিম্নে টা নিয়ে আলোচনা করা হলো,

Resistive Touchscreen:

এ ধরনের টাচস্ক্রীনে পর্দায় দুটি স্তর থাকে। প্রথম ও ২য় স্তরের মাঝে ফাকা স্থান থাকে। প্রথম স্তরে চাপ পড়ার ফলে মাঝের ফাকা অংশটি বেকিয়ে গিয়ে ২য় স্তরে চাপ পড়বে। এবং তারপর মোবাইলের প্রসেসরে সংকেত পাঠাবে। আর এভাবেই এই টাচ কাজ করে। Resistive Touchscreen আঙ্গুল বাদেও যেকোন কিছু দিয়ে টাচ করে ব্যবহার করা যায়। এতে স্ক্রীনে বেশি চাপ দিতে হয় এবং মাঝে মাঝে ঠিক জায়গামত চাপ পড়েনা। স্টাইলাস ব্যবহারের জন্য এই স্ক্রীন উপযোগী।

Capacitive Touchscreen:

এ ধরনের টাচ স্ক্রিনে শুধুমাত্র মানুষের হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই কাজ করা যায়। এটির ডিসপ্লেতে স্পর্শ করার সাথে সাথেই ইলেক্ট্রোস্টাকিক ফিল্ড তৈরী হয় এবং দ্রুত প্রসেসরে সিগনাল পৌছানোর মাধ্যমে কাজ করে। Capacitive Touchscreen বেশি দামের আধুনিক স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি ব্যবহার আরামদায়ক। তবে মানুষের আঙ্গুল বা অংগ ব্যাতিত অন্য কিছু দিয়ে টাচ করা যায়না।


ডিসপ্লের বিভিন্ন প্রকারের রেজ্যুলেশন?


qVGA - 320×240
HVGA - 480×320
VGA - 640×480
WVGA - 800×480
FWVGA - 854×480
HD - 1280×720
nHD - 640×360
qHD - 960×540
FHD - 1920×1080
QHD - 2560×1440 - 2K
UHD - 3840×2160 - 4K

আমাকে ফলো করতেঃ
1. Google Plus Link
2. Facebook Link

প্লিজ Subscribe YouTube Channel, টেকনিক্যাল ভিডিও দেখার জন্য। 

মোঃ সবুজ খান
টেক প্রিয়জন টিম

1 Comments

  1. পোষ্টটা খুব সুন্দর ছিলো??

    ReplyDelete
Previous Post Next Post

Contact Form