NFC [Near Field Communication] কি এবং কিভাবে কাজ করে তার বিস্তারিত নিয়ে আলোচনা।


[NFC ¬ Near Field Communication]
" NFC (Near Field Communication) সাধারনত দু'টি NFC সংযুক্ত ডিভাইসের মধ্যে ডাটা আদানপ্রদান করার এক অভিনব প্রযুক্তি। অবশ্য ডাটা আদানপ্রদান করার জন্য ডিভাইস দু'টি একে অপরের সাথে অনেকটাই গা ঘেঁষাঘেঁষি অবস্থায় থাকতে হবে, তবেই ডাটা আদানপ্রদান করা সম্ভব " - একজন নব-প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর ভাষ্য।

কিন্তু আজ আমরা একটু বিস্তারিত আলোচলা করবো NFC নিয়ে।

  • । কি এবং কেনো
  • । কিভাবে কাজ করে
  • । এর গতিবিধি
  • । ব্যবহিত মাধ্যম সমূহ
  • । সুবিধা এবং
  • । অসুবিধা সমূহ


 NFC কি এবং কেনো?

সাধারন অর্থে NFC (Near Field Communication) হচ্ছে খুব কাছাকাছি অবস্থানকৃত দুইটি NFC ডিভাইসের মধ্যেকার কমিউনিকেশন। যার ফলে অতি ক্ষুদ্র সেকেন্ডেই দুইটি ডিভাইস কানেক্টটেট হয়ে যায় এবং ডাটা আদানপ্রদান করা যায়। এই কমিউনিকেশনের জন্য একটা ট্রান্সমিটিং ডিভাইস লাগে আর আরেকটা লাগে যেটা সিগন্যাল রিসিভ করে। জিনিসটা আসলে ব্লুটুথের মত মনে হলেও ব্লুটুথ না।
Operate in 3 Modes
NFC ডিভাইসগুলো মূলত ২ প্রকার হয়ে থাকে,

  1. Active
  2. Passive

Active NFC ডিভাইসঃ Active NFC ডিভাইসগুলো একে অপরের সাথে ডাটা আদানপ্রদান করতে পারে। এবং নিজেদের মাঝে একটি কানেকশনও তৈরি করতে পারে (অতি অল্প সময়ে)। মজার ব্যাপার হচ্ছে একটি Active NFC ডিভাইস চাইলেই একটি Passive NFC ডিভাইসের সাথে কানেক্টেট হতে পারে। আমার এখনো মনে আছে Nokia NFC Enabled ডিভাইসগুলোর কথা।
সাধারনত অতি আদি কাল থেকেই বিভিন্ন ফোনে এবং স্মার্টফোনগুলোতে Active NFC ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার ফলে অতি নিকটবর্তী দুইটি ডিভাইসের মধ্যে কানেকশন তৈরি করে একে অপরের সাথে ডাটা লেনদেন করা যেতো।

Passive NFC ডিভাইসঃ Passive NFC ডিভাইসগুলা হল বিভিন্ন ট্যাগ[১] এবং ছোটছোট ট্রান্সমিটার যেগুলো active ডিভাইসে বিভিন্ন ড্যাটা পাঠাতে পারে, কিন্তু তাদের কোন ধরনের ব্যাটারি থাকেনা বা পাওয়ার সাপ্লাইও না!অর্থাৎ কোন ধরনের শক্তি ছাড়াই এটা ড্যাটা ট্রান্সমিট করতে পারে! একটি Passive NFC ডিভাইসে/ট্যাগে নির্দিষ্ট কিছু তথ্যাদি থাকে যা রিডাবল হয়।

ট্যাগ[১]- ট্যাগ আসলে উন্নত দেশের বিভিন্ন জিনিসে ব্যবহার করা এক ধরনের Passive NFC Device, প্রাইস ট্যাগ এর মত। এটাতে নির্দিষ্ট জিনিসের প্রয়োজনীয় ড্যাটা থাকে। যেমনঃ কোন জিনিসে NFC ট্যাগ আছে, আপনি আপনার Active NFC ডিভাইসটা Passive NFC ট্যাগের কাছে নিলেই ওই নির্দিষ্ট পন্যের/বস্তুর সকল তথ্য দেখতে পারবেন, এবং চাইলে সাথে সাথে বিল পেমেন্ট ও করতে পারবেন। 

NFC কিভাবে কাজ করে আর Passive Device কিভাবে পাওয়ার সাপ্লাই ছাড়া ড্যাটা দেয়?

ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই সবধরনের ওয়ারলেস সিগন্যালের মত NFC ও বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে ড্যাটা পাঠায়। তবে NFC টেকনলজি পুরানো RFID (Radio-frequency identification) এর ভিত্তিতে তৈরি যা তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশের মাধ্যমে ইনফরমেশন ট্রান্সমিট করে। আপনারা খেয়াল করেছেন বর্তমানে ওয়ারলেস চার্জিং দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এবং আপনারা জেনে অবাক হবেন এই প্রযুক্তিও তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশের মাধ্যমেই কাজ করে থাকে, তবে ইহা NFC নহে।

NFC এর সাথে Bluetooth/WiFi এর এখানে পার্থক্য আছে। কোন Active Device তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশের মাধ্যমে ইনফরমেশন ট্রান্সমিট করে,সেহেতু একইসাথে passive component কে তড়িত আবেশিত করতে পারে। ফলে passive component ড্যাটা দেয়ার মত যথেষ্ট শক্তি তড়িৎচৌম্বকীয় আবেশ থেকে পেয়ে যায় এবং এটার বাড়তি কোন পাওয়ার সোর্সের দরকার পড়েনা। তবে এজন্য দুইটা ডিভাইসকেই অনেক কাছে আনতে হয়।


NFC এর গতিবেগ 
NFC খুবিই কম দূরত্বে কাজ করে আনুমানিক ১০ সেমি. এবং এর ডাটা ট্রান্সফার স্পিড খুব কম ব্লুটুথ থেকেও।

। NFC ১০ সেমি. এর মধ্যে কাজ করে, যেখানে ব্লুটুথ ১০ মি. থেকে ১০০ মি. এর মধ্যে কাজ করতে সক্ষম।
। NFC তে সর্বোচ্চ ডাটা ট্রান্সফার স্পিড 424 kbit/s, যেখানে ব্লুটুথ v2.1 এ পাবেন সর্বোচ্চ 2.1 Mbit/s
। NFC অনেক কম পাওয়ার খরচ করে, এমনকি Bluetooth 4.0 থেকেও যার নাম Bluetooth low energy

ব্যবহিত মাধ্যম সমূহ 
NFC এর ব্যবহার বাংলাদেশে তেমন দেখা না গেলেও অন্যান্য উন্নত দেশগুলোতে এর ব্যবহার অনেক বেশি পরিলক্ষিত হয়।

Samsung Pay, Apple Pay, Google Wallet (Android Pay) পেমেন্ট সিস্টেম গুলোতে NFC এর ব্যবহার অনেক বেশি লক্ষ্যনীয়।
Samsung Pay
বড় বড় শপিং মল, বিভিন্ন রেস্তরাঁয় এবং টিকেট কাউন্টার গুলোতে NFC মাধ্যমে বিল-পে করা হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে এর প্রচল এখনোও দেখা না গেলেও খুব তাড়াতাড়ি তা দেখতে পারবেন।

আজকাল বড় বড় জাইন্ট কোম্পানি গুলোর ভিজিটিং কার্ডগুলোতে NFC পাওয়া যায়, সেখানে ওই কোম্পানির তথ্যাদি এবং কার্ড হোল্ডারের প্রয়োজনীয় তথ্য সেখানে থাকে।


সুবিধাঃ
১। খুব দ্রুত অন্য ডিভাইসের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
২। NFC অনেক কম পাওয়ার খরচ করে, এমনকি Bluetooth 4.0 থেকেও যার নাম Bluetooth low energy
৩। পেমেন্ট সিস্টেমকে অনেক বেশি সহজ এবং ফাস্ট করেছে।
৪। ইজি প্রসেস টু কানেক্ট - কানেকশন এর ক্ষেত্রে ইহা জঞ্জালমুক্ত।

অসুবিধাঃ
১। NFC অন থাকা কালিন তার খুব কাছাকাছি অবস্থানকৃত অন্য Active অথবা Passive ডিভাইসকে সনাক্ত করে ফেলে (না চাইতেও)।
২। সকল স্থানে NFC এর সেবা এই মুহূর্তে উন্মুক্ত নয়।
৩। এর বানিজ্যিক ব্যয় তুলনামূলক অনেক বেশি, তাই সকল ফোনে NFC থাকে না।
৪। যেহেতু NFC এর মাধ্যমে বিল পে করা হয়ে থাকে তাই হ্যাকার চাইলেই এডভান্স ডিভাইসের মাধ্যমে NFC হ্যাক করতে পারে।

আমাকে ফলো করতেঃ
1. Google Plus Link
2. Facebook Link

প্লিজ Subscribe YouTube Channel, টেকনিক্যাল ভিডিও দেখার জন্য। 

মোঃ সবুজ খান
টেক প্রিয়জন টিম

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form