স্যামসং ডিভাইসের কিছু প্রিমিয়াম ফিচার যা লাইফ টাইম রিলেটেট, অবশ্যই আপনাদের জানা থাকা দরকার।


Samsung Premium Features

আচ্ছা একজন ক্রেতা হিসাবে আপনি কি কি আচরন করেন এবং তার ফলাফল কি হবে তাও আপনি জানেন !!!

ধরেন আপনি খুব ভালো এন্ড্রোয়েড সম্পর্কে জানেন এবং একটি এন্ড্রোয়েড ডিভাইসের ব্যসিক স্পেক সম্পর্কে ভালো আইডিয়া রাখেন।

এখন আপনার একটি এন্ড্রোয়েড ডিভাইস লাগবে যা কিনা লাইফ রিলেটেড এবং কিছু এডভান্সড ফিচারসম্পন্ন থাকবে।

চলুন দেখি পরবর্তী অবস্থা গুলো কি কি হয়,

আমি যতটুকু জানি ক্রেতার চাহিদাগুলো Samsung এর কিছু ফিচারের সাথে মিলে যায় যেহেতু ক্রেতা র‍্যাম,রম,প্রসেসর সম্পর্কে ভালো আইডিয়া রাখে সো তাকে এই বিষয়ে না বলে Samsung এর ইউনিক ফিচার সম্পর্কে বললে ভালো হবে এবং  ফিচারগুলো একজন মানুষের জীবনের সাথে কিভাবে সম্পৃক্ত তা বুঝিয়ে বলতে হবে।

বি.দ্র : জানি অনেক ক্রেতাই এটা পড়ছেন, এবং আমি খুশি যে কিছুক্ষনের মধ্যেই আপনি কিছু ইউনিক ফিচার সম্পর্কে জানতে পারবেন।

চলুন তাহলে ফিচার গুলো নিয়ে কথা বলা যাক,

 ১) সুপার এমোলেডঃ
sAmoled Tech

বাজারের ফোনগুলোর মধ্যে যদি ডিসপ্লের মধ্যে পার্থক্য করতে চাই তাহলে প্রথমেই মাথায় আসবে সুপার এমোলেড যা এখন পর্যন্ত স্যামসং স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়। যাকিনা স্যামসংকে অন্য সকল ব্রান্ড থেকে আলাদা করে,কারন সুপার এমোলেড একমাত্র স্যামসং এর নিজস্ব টেকনোলজি। তাই ক্রেতাকে অবশ্যই সুপার এমোলেডের সুবিধাসমূহ গুলো বলতে হবে, যা বাস্তব অর্থে তার জীবনের সাথে সম্পৃক্ত।

সুবিধাসমূহ:
১। AMOLED এর সূর্যের আলোর কম ভিজিবিলিটির সমাধান দিতে Samsungনিয়ে এসেছে Super AMOLED
২। এটি AMOLED ডিসপ্লে এর আধুনিক ভার্সন।
৩। স্যামসং এর গ্যালাক্সী স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়।
৪। এই ডিসপ্লে সবচাইতে হালকা ডিসপ্লে।
৫। ব্যাটারীর খরচও আগের থেকে কম হয়।
৬। এই ডিসপ্লেটি সূর্যের আলোয় নিখুঁত ভাবে দেখা যায়।
৭। এতে পাবেন হাই কোয়ালিটির ছবি ও মুভি দেখার নিশ্চয়তা Super Amoled এর উন্নত সংষ্করণ হচ্ছে Super Amoled plus

একটা গল্পের মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করি,

আচ্ছা স্যার আপনি খেয়াল করবেন, এমন অনেক সময় হয়ে থাকে যে আকাশে প্রচণ্ড রোদ এবং আপনি আপনার পকেট থেকে আপনার স্মার্ট ফোনটি বের করে কাওকে কল করবেন কিন্তু কি হলো স্যার আপনার ফোনটির ডিসপ্লে তখন অনেকটাই অন্ধকার দেখা যাচ্ছিলো কারন স্যার ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে TFT LCD ডিসপ্লে, যার অসুবিধাসমূহ নিচে দিয়ে দিলাম,

অসুবিধাসমূহ:
১। খারাপ কোয়ালিটির TFT LCD ডিসপ্লে যুক্ত মোবাইলে রঙ ফ্যাকাশে দেখাবে এবং স্ক্রীনের সাইড দিয়ে তাকালে অন্ধকার দেখা যাবে
২। এ ধরনের ডিসপ্লেতে ব্যাটারীর খরচ বেশি হয়
৩। সূর্যের আলোতে এই স্ক্রীনে পরিস্কার দেখতে অসুবিধা হয়
৪। এই ডিসপ্লেতে ডিসপ্লের কালো অংশ তেমন গাঢ় বা ডিপ নয়। এখন আমরা সাধারণত দেখে থাকি প্রায় অধিকাংশ লো বাজেট ও মাঝামাঝি বাজেটের মোবাইল গুলোতে এটা অহরহ ব্যবহার হচ্ছে। তবে ব্রান্ড ভেদে এর মান একটু কম বেশি হতে পারে।

২) এস - বাইক মুডঃ
S-Bike Mode Features


এরপর আসি এস - বাইক মুড নিয়ে, স্যার হয়তো জানে যে বাংলাদেশে অধিক এক্সিডেন্ট হচ্ছে বাইক এক্সিডেন্ট যা কিনা মানুষের লাইফের সাথে সম্পৃক্ত। তাই স্যামসং মানুষ নিয়ে চিন্তা করে ক্রেতাদের জীবনের প্রায়োরিটি স্যামসং এর কাছে অনেক। তাই তাদের জীবনের কথা চিন্তা করেই স্যামসং নতুন একটি ফিচার নিয়ে আসছে যা এস - বাইক মুড।

সুবিধাসমূহঃ
১। বাইক এক্সিডেন্ট এর মাত্রা অনেকাংশে 0% হয়ে যায়।
২। অচেতন থেকে সচেতন করে এই এস - বাইক মুড।
৩। জীবনের প্রায়োরিটি অনেক মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এই এস - বাইক মুড।

"স্যার আমি চেলেঞ্জ করে বলতে পারি আমাদের নির্দিষ্ট কিছু স্যামসং ডিভাইস ছাড়া অন্য কোনো চাইনিজ ব্রান্ড ফোনে আমাদের এই এস - বাইক মুড ফিচারটি পাবেন না।"

**মডেলসমূহ - J1 NXT Prime, J3, J2' 16, J7' 16, J7 Prime আমি এই ডিভাইসগুলোতে এস - বাইক মুড পেয়েছি।

আসলেই তাই, আমি নিজেও মার্কেট এর বিভিন্ন ফোন সার্চ করে দেখলাম যে এস - বাইক মুড নাই। এবং এর উপকারিতা আসলেই লাইফ সেভিং এর সাথে সম্পৃক্ত।

৩) আলট্রা ডাটা সেভিং মুডঃ
Ultra Data Saving Mode


স্যামসং এর আরো একটি প্রিমিয়াম ফিচার হলো আলট্রা ডাটা সেভিং মোড। এই ফিচারটির মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৫০%* ইন্টারনেট ডাটা সেভ করা যায়।

সুবিধাসমূহঃ
১। ব্যাকগ্রাউন্ডের সব অ্যাপের ডাটা ব্যবহার বন্ধ রাখা যায়।
২। স্ক্রিন অফ রাখার ৫ মিনিট পর সব অ্যাপের ডাটা সার্ভিস বন্ধ  হয়ে যাবে।
৩। App Exceptions থেকে এড করে প্রয়োজনীয় ৬টি অ্যাপের ডাটা এক্টিভ রাখা যায়।
৪। ডাটা কমপ্রেস করে খুব দ্রুত ব্রাউজিং করা এবং ভিডিও স্ট্রিমিং করা যায়।

উপরোক্ত সুবিধাসমূহের ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি সর্বোচ্চ ৫০%* ইন্টারনেট ডাটা সেভ করতে পারবেন। চলুন তাহলে একটু ভিতরে গিয়ে দেখি,

১। এই অ্যাপটি ১১% র‍্যাম সাশ্রয়ী।
২। ভিডিও স্ত্রিমিং এ সর্বোচ্চ ৫০% পর্যন্ত ডাটা সেভ করে।
৩। নিউজ সাইট বা অ্যাপ এ সর্বোচ্চ ৪০% পর্যন্ত ডাটা সেভ করে।
৪। ব্রাউজিং এ সর্বোচ্চ ৩০% পর্যন্ত ডাটা সেভ করে।
৫। যেকোনো অ্যাপ ব্যবহারে সর্বোচ্চ ৪০% পর্যন্ত সাশ্রয়।

আমি এই ফিচারটি নিজে ব্যবহার করার পর এর উপকারিতা উপলব্ধি করতে পেরেছি, আচ্ছা চলুন আপনাকে একটু ফিল করাই,

"স্যার আমরা যারা অনলাইনে গেম (Clash of Clan, Asphalt 8 etc) খেলতে পছন্দ করি এবং চাই যে শুধু নির্দিষ্ট একটি অ্যাপের জন্যই আমার ডাটা ব্যবহার করতে তাদের জন্য এই ফিচারটি খুব কাজের কারন এই ফিচারের ফলে আমি যখন COC খেলবো শুধু COC এর জন্যই আমার ডাটা ব্যবহার হবে এবং ব্যাকগ্রাউন্ড এ সব ডাটা অফ থাকবে।

আমরা বিভিন্ন সময় চাকরির জন্য bdjobs অথবা কিছু অনলাইন ওয়েবপেজ এ গিয়ে সার্চ করি এবং দেখা যায় অধিক ক্ষেত্রেই আমরা ৯ টাকায় ৩২ এমবি ক্রয় করি অথবা ছোট ছোট প্যাকেজ গুলো নিয়ে থাকি। কিন্তু দুঃখের ব্যপার হচ্ছে যখনিই আমরা নেট কানেক্ট করি ব্যাকগ্রাউন্ড এ সব অ্যাপ নেট কানেক্টটেট হয়ে খুব দ্রুত এমবি শেষ হয়ে যায়।

সেক্ষেত্রে স্যামসং এর আলট্রা ডাটা সেভিং মুড খুব কাজে আসবে। এবং প্রেজেন্ট নাও শুধু স্যামসং এই ফিচারটি তাদের ফোনগুলোতে ব্যবহার করছে।

৪) আলট্রা পাওয়ার সেভিং মুডঃ
Ultra Power Saving Mode


একবার কি হলো জানেন, "তাড়াহুড়া করে বাসায় এসে মোবাইল চার্জ দিতে ভুলে গিয়েছিলাম, এবং সকাল সকাল অফিস এ মিটিং এর জন্য বের হয়ে পরেছিলাম। আমার খেয়াল ই করা হয় নাই আমার ফোলে চার্জ ছিলো না, মাত্র ২০% চার্জ অবশিষ্ট ছিলো। তো আর কি আমার মোবাইল ৪৫ মিনিট পর বন্ধ হয়ে যায়"

আচ্ছা আমার এই ঘটনার সাথে অনেক পাঠকের পরিস্থিতিই মিলে যাবে জানি, কিন্তু কি করার বলেন তো !!!

এই সকল সমস্যা আসলে সমস্যা না বলে দুর্ঘটনাই বলা যায়। আসলেই এই সকল দুর্ঘটনার কথা বিবেচনা করে স্যামসং তাদের মোবাইল গুলোতে আরো একটি প্রিমিয়াম ফিচার এড করেছে তা হলো আলট্রা পাওয়ার সেভিং মুড। আপনারা খেয়াল করবেন বর্তমানে বেশিরভাগ স্মার্টফোনগুলোতে পাওয়ার সেভিং মুড পাওয়া যায় কিন্তু আলট্রা পাওয়ার সেভিং মুড শুধুই স্যামসং এর নিজস্ব টেকনোলোজি।


চলুন দেখে নেই আলট্রা পাওয়ার সেভিং মুড অন করার পর কি কি পরিবর্তন হবে,

*অ্যাপশূন্য হোমস্ক্রিন
*মোবাইলের ইন্টারফেস পরিবর্তিত হবে
*ব্রাইটনেস একদম নিম্ন অবস্থায় থাকবে
*সিপিওর গতি কমে যাবে
*ডিসপ্লের টাইমিং কমে যাবে
*চলমান সকল ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে
*Bluetooth এবং Wi-Fi বন্ধ হয়ে যাবে
*স্ক্রিন অফ থাকা কালিন মোবাইল ডাটা বন্ধ থাকবে।

বাস্তবিক অর্থে আলট্রা পাওয়ার সেভিং মুড বিশেষ মুহূর্তে ব্যবহার করার জন্য, যখন আপনার মোবাইলে ২০% চার্জ অবশিষ্ট থাকবে এবং আপনাকে ৮ ঘন্টা কল/এসএমএস দিয়ে ফোনটি ব্যাকআপ রাখতে হবে।


আমার জানা মতে এই প্রিমিয়াম ফিচারগুলো স্যামসং ডিভাইসগুলোতে পেয়েছি, এবং আসলেই এই ফিচারগুলোর উপকারিতা বর্ননাতীত। আমি নিশ্চিত উপরের কোনো না কোনো একটি ফিচার আপনার লাইফ এর রিলেটেট।

আমাকে ফলো করতেঃ
1. Google Plus Link
2. Facebook Link

প্লিজ Subscribe YouTube Channel, টেকনিক্যাল ভিডিও দেখার জন্য। 

মোঃ সবুজ খান
টেক প্রিয়জন টিম

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form