বন্ধুরা আমরা অনেকেই আছি যারা এখনো Chipset এবং CPU পার্থক্য সঠিকভাবে বুঝতে পারি নাই, আসলে কোনটার কাজ কি এবং কোনটা কার সাথে রিলেটেড তাও আমাদের জানা দরকার।
তাহলে প্রথমেই দেখে নেই Chipset কি?
Chipset কি?
![]() |
Snapdragon 800 |
মূলত একই কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট চিপসমূহ বা Integrated Circuits নিয়ে চিপসেট গঠিত হয়। যেমন ধরা যাক আপনার মোবাইলের Camera, Bluetooth, Wi-Fi, Touch Screen with CPU/Flash storage/Ram ইত্যাদির একে অপরের সাথে অভ্যন্তরীণ সংযোগ ইস্থাপন করাই এর কাজ।
এই চিপসেটই হলো এন্ড্রয়েড হার্ট। এখানে অবশ্যই থাকে প্রসেসর এবং জিপিউ। বাকি অনেক কিছুই থাকে যেমন, অডিও চিপ, ওয়াইফাই চিপ, এলটিই চিপ, মেমোরি কন্ট্রোলার ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে প্রসেসর এবং জিপিউ বাদে বাকি গুলোর মধ্যে সবগুলোই সব চিপসেটে থাকবে এমন কোন কথা নেই। বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন রকম SoC (System On Chip) ডিজাইন করে থাকে। তাই প্রতিটা কোম্পানির চিপসেটেরই কিছু স্বকীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
![]() |
Snapdragon 810 |
তাহলে এইবার CPU এর সম্পর্কে আইডিয়া নেয়া যাক,
CPU কি?
আমার এক বন্ধু একটি অক্টাকোর প্রসেসরের এন্ড্রোয়েড ফোন চালায়, এবং অন্য একটি বন্ধু কোয়াডকোর প্রসেসরের ফোন চালায় কিন্তু মজার বেপারটা হলো যে কোয়াডকোর থেকে অক্টাকোর প্রসেসরের মোবাইলটি ল্যাগ বেশি করে, এবং এই ব্যাপারটি নিয়ে আমার বন্ধু খুব চিন্তিত।
তাই আজ আমি মোবাইল প্রসেসর এর কমন টার্ম গুলো নিয়ে আলোচনা করবো। আজ আমরা জানবো,
১। কোয়াডকোর প্রসেসর বা অক্টাকোর প্রসেসর হলেই কি প্রসেসর ভালো হয়
২। বেশি গিগাহার্জ হলেই ভালো প্রসেসর হয় ?
৩। আপনি মোবাইল ফোন কেনার সময় প্রসেসরের দিকে কোন বিষয় গুলোর উপর বেশি খেয়াল রাখবেন
তো চলুন শুরু করা যাক,
বর্তমানে চারটি বড় বড় কোম্পানি প্রসেসর তৈরি করে থাকে কোয়ালকম, মিডিয়াটেক, স্যামসাং এবং এনভিডিয়া। এখন এই চার কোম্পানিকে প্রসেসর বানাতে যে নকশার প্রয়োজন পড়ে অর্থাৎ আর্কিটেকচার এর প্রয়োজন পড়ে, তা আর্ম (ARM) নামক একটি কোম্পানি লাইসেন্স এর সাথে সরবরাহ করে। একজন ক্রেতা যখনি একটি নতুন ফোন ক্রয় করে তখন তিনটি বিষয়ের উপর সবসময় খেয়াল রাখে,
১। ফোনটি ল্যাগ করবে কিনা?
২। ফোনটি কতটা গরম হতে পারে?
৩। ফোনটির ব্যাটারি লাইফ ভালো হবে কি না?
এবং টেকনিক্যালি এই তিনটি কথাই কোথাও না কোথাও যুক্ত থাকে ফোনটির প্রসেসরের সাথে। তাছাড়া আপনি যখনই দুইটি বা তিনটি ফোনের মধ্যে তুলনা করেন তখন দেখেন যে,
১। ফোনটির প্রসেসর ডুয়ালকোর? না কোয়াডকোর প্রসেসর? না অক্টাকোর।
২। এদের ফ্রিকুএন্সি কার কত বেশি! আর আমাদের মানুষ জাতির তো একটা মূল মন্ত্র আছেই যে বেশি নাম্বার মানে বেশি ভালো জিনিস।
তাই তো আমরা সর্বদা ভেবে দেখি যে অক্টাকোর প্রসেসর কোয়াডকোর প্রসেসর থেকে বেশি ভালো এবং ২ গিগাহার্জ ফ্রিকুএন্সি ১.৫ গিগাহার্জ ফ্রিকুএন্সি থেকে ভালো। আর এই মূলমন্ত্রের সাথে চিপকে লেগে থাকার জন্য জেনে বা অজান্তে আমরা ভুল করে থাকি এবং ভুল প্রসেসর নির্বাচন করে ফেলি।
আপনি যখনি প্রসেসর এর মধ্যে তুলোনা করবেন তখনি আপনাকে ৪টি বিষয়ের উপর খেয়াল রাখতে হবে
১। আর্কিটেকচার
২। টেকনোলজি
৩। প্রসেসরের কোর সংখ্যা
৪। ফ্রিকুএন্সি (গিগাহার্জ)
চলুন তাহলে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক,
আর্কিটেকচার/নকশা
সর্ব প্রথম বিষয়টি হলো প্রসেসরটির আর্কিটেকচার বা নকশা। আমি আগেই বলেছি প্রসেসর প্রস্তুতকারী কোম্পানিদের আর্ম (ARM) নামক একটি কোম্পানি লাইসেন্স এর সাথে আর্কিটেকচার ডিজাইন সরবরাহ করে থাকে। এবং এই কোম্পানিটির আর্কিটেকচার ডিজাইন বছরের পর বছর ধরে উন্নত হতেই চলেছে। যেমন প্রথমে কর্টেক্স (Cortex) এ৫ ছিল তারপর এ৭, এ৯, এ১১, এ১৫, এ৫৩, এ৫৭, এ৫৯ ইত্যাদি। আপনি ভাবতে পারেন এগুলো কি এবং এগুলো দিয়ে কি হবে? দেখুন সহজ বাংলা ভাষায় বুঝতে নাম্বার যতো বেশি হবে ততো ভালো ডিজাইন আপনি দেখতে পাবেন। যেমন কর্টেক্স এ৫৭ এ৫৩ থেকে উন্নত অথবা কর্টেক্স এ১৫ এ৯ থেকে উন্নত। অর্থাৎ প্রসেসর শুধু কোয়াডকোর বা অক্টাকোর হলেই হবে না দেখতে হবে যে এই প্রসেসরে কোন আর্কিটেকচার ডিজাইন ব্যবহার করা হয়েছে।
টেকনোলজি/প্রযুক্তি
দ্বিতীয়ত কথা আসে টেকনোলজির। অর্থাৎ সেই প্রসেসরটি বানাতে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তার। দেখুন একটি প্রসেসরে ছোটছোট লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি ট্রানজেস্টর লাগানো থাকে। এখন একেকটি ট্রানজেস্টরের আকার যতো ছোট হবে, প্রসেসর ততো দ্রুত কাজ করতে সক্ষম হবে এবং তো বেশি ব্যাটারি সেভ করবে। এখানে কি হয়, প্রসেসর প্রস্তুতকারী কোম্পানিগন আর্ম থেকে যে আর্কিটেকচার ডিজাইন পায় তা নিজেদের ইচ্ছা মতো হিসেবে এবং টেকনোলজি অনুসারে ট্রানজেস্টর ছোট এবং বড় হিসেবে তৈরি করে। বর্তমানে স্যামসাং সেই হিসেবে প্রথম স্থানে রয়েছে। স্যামসাং তাদের নিজস্ব টেকনোলজি ব্যবহার করে সবচাইতে ছোট ট্রানজেস্টর বানিয়ে ফেলেছে। এবং এর সাইজ ১৪ ন্যানোমিটার। কোয়ালকম এর সাইজ ২০ ন্যানোমিটার, মিডিয়াটেক কখনো ২৬ কখনো ২৮ ন্যানোমিটার ট্রানজেস্টর তৈরি করে। তো আপনার প্রসেসরের ট্রানজেস্টর গুলোর সাইজ যতো ছোট হবে আপনি ততোবেশি কার্যক্ষমতা দেখতে পাবেন এবং আপনার প্রসেসরের স্পীড ততো বেশি হবে।
প্রসেসরের কোর সংখ্যা
তৃতীয়ত যে বিষয়টি এসে থাকে তা হলো নাম্বার অফ কোরস। অর্থাৎ প্রসেসরের কোর সংখ্যা। এখন এই কোর জিনিসটা কি? চলুন সহজ ভাষায় বুঝবার চেষ্টা করি কোর সম্পর্কে। মনে করুন আমি একটি প্রসেসর, এবং আমার দুইহাত হলো আমার দুইটি কোর। যেহেতু আমার কাছে দুটি কোর অর্থাৎ দুটি হাত আছে সুতরাং আমি দুইটি কাজ একসাথে করতে পারবো। এখন কোনো প্রসেসর যদি কোয়াডকোর হয় তবে এর মানে হলো এর কাছে চারটি হাত রয়েছে। চার হাত মানে একসাথে সে চারটি কাজ করতে পারবে। আরেকটি প্রসেসর হলো অক্টাকোর, অর্থাৎ এর ৮ টি হাত রয়েছে। অর্থাৎ সে ইচ্চামত আরামছে যেকোনো কাজ করতে পারবে। এখন ভেবে দেখুন যে একটি কাজ যদি আমি দুই হাতে করি এবং একই কাজ যদি ৮ হাতে করা হয় তবে সে কাজটি কত তাড়াতাড়ি সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ কোর হলো প্রসেসরের একেকটি হাত। যা একসাথে মিলে বা আলাদা আলদা করে এক কাজকে অনেক সহজে অনেক দ্রুত সম্পূর্ণ করতে পারে। এবং এর ফলে প্রসেসর গরমও কম হয়। তো কোয়াডকোর এবং অক্টাকোর প্রসেসরের ক্ষেত্রে অক্টাকোর উত্তম হবে। কিন্তু অক্টাকোর তখনই উন্নত হবে যখন এর আর্কিটেকচার এবং বানানোর প্রযুক্তির সমান একতা থাকবে। যদি এই বিষয় গুলো আলদা আলাদা হয় তবে আপনি কখনই বলতে পারবেন না যে কোয়াডকোর বেশি ভালো না অক্টাকোর বেশি ভালো।
ফ্রিকুএন্সি (গিগাহার্জ)
দেখুন সর্বশেষে যে জিনিসটি আসে তা হলো গিগাহার্জ। অমুক প্রসেসর ২ গিগাহার্জ, তমুক প্রসেসর ১.৫ গিগাহার্জ। তো গিগাহার্জ এর মানে টা কি? দেখুন প্রত্যেকটি প্রসেসরের সাথে একটি ঘড়ি লাগানো থাকে। এবং সেই ক্লক বা ঘড়ির টাইমিং এর সাহায্যে প্রসেসর কাজ করে থাকে। এখন ১ গিগাহার্জ প্রসেসরের মানে হলো এই প্রসেসর ১ সেকেন্ডে ১০ কোটিবার কাজ করবে। এখন একটি কাজ করতে একটি প্রসেসরকে কত গুলো ওয়ার্ক সাইকেল ব্যবহার করতে হবে তা নির্ভর করে প্রসেসরটির উপর এবং কাজটির উপর। প্রসেসরের ১ বার কাজ করার সময়কে একটি ওয়ার্ক সাইকেল ধরা হয়।
আশা করি আপনারা সবাই উপরের বিষয় গুলো বুঝতে পেরেছেন, এবং বিষয় গুলোর উপর অবশ্যই আমল আনার চেষ্টা করবেন।
আমাকে ফলো করতেঃ
1. Google Plus Link
2. Facebook Link
প্লিজ Subscribe YouTube Channel, টেকনিক্যাল ভিডিও দেখার জন্য।
মোঃ সবুজ খান
টেক প্রিয়জন টিম
Tags
Tips and Tricks
This article was incredibly informative and clearly explained the key differences between chipsets
উত্তরমুছুনandprocessor in Android devices. I’ve always seen terms like Snapdragon, Octa-core, or GHz while
buying a phone but never truly understood what they meant or how they impact performance. Thanks to
this post, I now have a much clearer idea.
I especially appreciated the way you explained architectural importance (like Cortex-A53 vs A57),
manufacturing technology (14nm vs 28nm), and how core count and GHz alone don't define performance.
These are crucial things to know before choosing a processor, and you made them simple to understand for general users like me.